বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিচার বিভাগ ও পুলিশের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত শনিবার একটি রাজনৈতিক সমাবেশে ইমরান খান ওই হুমকি দেন বলে পুলিশ অভিযোগ করেছে।
এ নিয়ে দেশটিতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে হাজার হাজার সমর্থক অবস্থান নিয়েছে। ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান খান শনিবার অভিযোগ করেন, তার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপরেই তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর করার কথা জানায় পুলিশ।
এর আগে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওই সহযোগীকে আটক করা হয়েছিল। সহযোগীকে আটক করায় শনিবার এক জনসভায় ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধান এবং একজন নারী বিচারকের নিন্দা করেন ইমরান খান।
সমাবেশে ওই দুই কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তোমরাও প্রস্তুত থেকো, আমরাও তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে পুলিশের তদন্তকারীরা বলছেন, রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে ইমরান খান সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইন ভঙ্গ করেছেন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত শুরুর খবর জানার পর হাজার হাজার সমর্থক তার ইসলামাবাদের বাড়ির সামনে জড়ো হন।
তবে সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে নয়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য সেখানে রয়েছেন।
পুলিশের তদন্ত শুরু করার ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন পাকিস্তানের সরকার ও ইমরান খানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। গত এপ্রিল মাসে একটি অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিদায় নিতে হয় ইমরান খানকে। এরপর থেকেই তিনি নতুন নির্বাচনের দাবি করে আসছেন।
বিভিন্ন বক্তব্যে পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচনাও করেছেন।
শনিবার পাকিস্তানের গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে, ইমরান খানের বক্তব্য সরাসরি প্রচার করতে পারবে না দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো, কারণ সেখানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য থাকে।
তবে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, সরকার তার ওপর সেন্সরশিপ আরোপ করতে চাইছে। রোববার রাওয়ালপিন্ডিতে আরেকটি সমাবেশে ইমরান খান ওই ঘোষণার নিন্দা করেছেন।
তিনি আরও দাবি করেছেন, সরকার ইউটিউব দেখায় বাধা তৈরি করছে, যাতে জনগণ তার বক্তব্য শুনতে না পারে।
ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হলেও পাকিস্তানে ইমরান খানের অনেক ভোটারের সমর্থন রয়েছে।
গত মাসেই পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের উপ-নির্বাচনে পিএমএল-এনকে হারিয়ে বড় বিজয় পেয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই।
অনেকে মনে করেন, ওই নির্বাচনের ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ভোটারদের মধ্যে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচকে পরিণত হয়েছে ইমরান খান।